কলকাতার ইডেন গার্ডেনে শেষ দিনে টেস্ট নিশ্চিত ড্র জেনেও যে ক’জন দর্শক এসেছিলেন খেলা দেখার জন্য, শেষ মুহূর্তের দারুণ এক রোমাঞ্চকর অনুভুতি নিয়েই ঘরে ফিরতে পেরেছেন তারা। কারণ, নিষ্প্রাণ ম্যাচটিতে শেষ বেলায় যেভাবে ভারতীয় বোলাররা লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের ওপর, চেপে বসেছিলেন- আর কিছুক্ষণ সময় পেলে তো ম্যাচটাই হয়তো জিতে যাচ্ছিলেন তারা। বিরাট কোহলিদের জন্য হতো সেটা বিরাট পাওয়া।
কিন্তু টেস্ট চলে তার আপন গতিতে। সময় শেষ হয়ে গেলে খেলাও শেষ। অবস্থায় যাই হোক না কেন, তার ওপর ভিত্তি করেই ফল নির্ধারণ। সুতরাং, সে হিসেবে নিস্প্রান ড্র দিয়েই শেষ হলো ম্যাচটি। কেউ জেতেনি, কেউ হারেওনি। শেষ মুহূর্তের রোমাঞ্চ ক্রিকেটকেই জয়ী করে দিয়েছে।
ইডেন গার্ডেনে সবুজ উইকেট তৈরি করেই বিপদে পড়েছিল ভারত। লঙ্কান পেসারদের গতির আগুনে পুড়তে হলো তাদের। প্রথম ইনিংসে তাই অলআউট হতে হয়েছে মাত্র ১৭২ রানে। যদিও শ্রীলঙ্কাও খুব বেশিদুর এগুতে পারেনি। ২৯৪ রানে অলআউট হয়েছিল সফরকারীরা। ১২২ রানের লিড নিতে সক্ষম হয় দিনেশ চান্ডিমালের দল।
জবাব দিতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে পুরোপুরি ভিন্ন চেহারায় ভারত। এটাই ছিল ভারতের আসল চেহারা। খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। ওপেনার শেখর ধাওয়ান ৯৪ রান করে আউট হন। ৭৯ রান করেন আরেক ওপেনার লোকেশ রাহুল। বিরাট কোহলি করেন অপরাজিত সেঞ্চুরি। তিনি নট আউট থাকেন ১০৪ রানে।
৮ উইকেট হারিয়ে দলীয় ৩৫২ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। ফলে জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার সামনে দাঁড়িয়ে যান ২৩১ রানের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য তাড়া করে জয় সম্ভব নয়। কারণ সময় ছিল খুব কম। নিশ্চিত ড্রয়ের ম্যাচ। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে উল্টো ভারতীয় পেসারদের তোপের মুখে দিশেহারা হয়ে পড়ে লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। ভুবনেশ্বও কুমার আর মোহাম্মদ শামি যেন মুর্তিমান আতঙ্ক। একের পর এক উইকেট তুলে নিতে শুরু করেন তারা। ভুবনেশ্বর নেন ৪ উইকেট। শামি নেন ২টি। ১টি নেন উমেষ যাদব।
৭ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা যখন দিন শেষ করে স্কোরবোর্ডে তাদের রান ৭৫। ভাগ্যিস দিন শেষ হয়ে গিয়েছিল। আর কিছুক্ষণ থাকলে পরাজয়ই বরণ করতে হতো তাদের।