ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সোমবার গোটা পটুয়াখালী জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় এখানকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিও। আর ঠিক এ সময়ে হাসপাতালে ভর্তি মানসুরা বেগমের প্রসব বেদনা ওঠে। যথাসময়ে অপারেশন না করা হলে বিপত্তি ঘটতে পারে-এমন আশঙ্কায় উপায়ান্তর না পেয়ে টর্চের আলোতে অপারেশন করতে বাধ্য হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে ওই নারী সুস্থ আছেন। টর্চের আলোতে অপারেশনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (গাইনি বিভাগ) ডাক্তার জাকিয়া সুলতানা বলেন, বাচ্চা জরায়ুতে না হয়ে ডিম্বনালিতে হয়েছে। ফলে ডিম্বনালি ফেটে পেটের ভেতরে প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয়। মানসুরার অবস্থার অবনতি হলে আমরা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু সিত্রাংয়ের প্রভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন হয়ে পড়ে আমাদের প্রতিষ্ঠান। তাই মোবাইলটর্চের আলোতে অস্ত্রোপচারে বাধ্য হই এবং সফলও হই। তা না হলে রোগীকে বাঁচানো যেত না। বর্তমানে রোগী সুস্থ আছেন। তিনি বলেন, এটা নতুন নয়, বিদ্যুৎ নিয়ে আমরা প্রায়ই ভোগান্তির শিকার হই। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অস্ত্রোপচারের ছবি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। একাধিক সূত্র জানায়, পটুয়াখালীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ভিআইপিদের বাসায় ডাবল বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। রয়েছে জেনারেটরসহ নানা ব্যবস্থা। অথচ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটিতে আজও বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা হয়নি। এ কারণে রোগীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। জানা যায়, এক যুগ আগে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে একটি আধুনিক জেনারেটর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে যার বাজার মূল্য আনুমানিক ২০ লাখ টাকা। যা আজও বাক্সবন্দি রয়েছে জরুরি বিভাগের পাশে। এ প্রসঙ্গে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল মতিন গনজাগরনকে বলেন, ডাবল বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য সব প্রস্তুত আছে। শুধু ঠিকাদারের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগের মতের অমিল হওয়ায় ডাবল বিদ্যুৎ সংযোগ হয়নি। তবে এ বিষয়ে গণপূর্ত ও বিদ্যুৎ বিভাগ ভালো বলতে পারবে। এক যুগ ধরে জেনারেট বাক্সবন্দি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে অন্য কথা বলেন। পটুয়াখালী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-অর রশীদ বলেন, যন্ত্রাংশ জটিলতায় ডাবল বিদ্যুৎ সংযোগ হচ্ছে না। বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে, এলে সংযোগটি দেওয়া হবে। জেনারেট চালু না করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজ প্রকল্পে তিনটা বিদ্যুৎ সাবস্টেশন চাহিদা দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ এলে স্টেশন নির্মাণ করে জেনারেটর চালু করা হবে। পটুয়াখালী বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন বলেন, হাসপাতালে ডাবল বিদ্যুৎ সংযোগ তো অনেক আগেই দেওয়া আছে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তুচ্ছ কারণে ব্যবহার করছে না। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রশ্নের সম্মুখীন হলে আমাদের দেখিয়ে দেয়; যা অন্যায়