বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৯:১৮ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
নিজের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার সহ মনের কথা ও তথ্য দিয়ে  সংবাদ পাঠাতে পারেন, আপনার পরিচয় গোপন রেখে যাচাই বাছাই করে  নিয়ম অনুযায়ী   প্রকাশ করা হবে ।
শিরোনামঃ
শহরে অভিযান চালিয়ে ৪৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হবিগঞ্জে এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন, পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেবেন নাহিদ ইসলাম হবিগঞ্জ কারাগারে বন্ধুকে গাঁজা দিতে গিয়ে নিজেই বন্দি লাখাইয়ে বিষ পানে গৃহবধূর মৃত্যু: মো নুরুজ্জামান রাজু হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার পূর্ব বুল্লা গ্রামে ২২ বছর বয়সী এক গৃহবধূ লিপি রাণী সরকার বিষ পানে মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বিষপানের পর দুই দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় নিজ বাড়িতে বিষপান করেন লিপি রাণী সরকার। বিষপানের পর তাকে দ্রুত বুল্লা বাজারের একটি ফার্মেসিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর এবং পানি খাওয়ানোর পর তিনি কিছুটা সুস্থ বোধ করলে ফার্মেসি থেকে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে বাড়িতে ফেরার কিছুক্ষণ পরই লিপি রাণী সরকারের অবস্থার অবনতি ঘটে এবং তার কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তাকে দ্রুত হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক রাত চিকিৎসার পর তার অবস্থার আরও অবনতি হলে পরদিন তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার তার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে লিপির লাশ পূর্ব বুল্লা গ্রামে তার স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসা হয় এবং সেখানেই তাকে দাহ করা হয়। লিপির বাবার বাড়ি মাধবপুরের দুর্গাপুর গ্রামে। তার বাবার নাম সতিন্দ্র সরকার। এ বিষয়ে লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বন্দে আলী নিশ্চিত করেছেন যে, মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে লিপির লাশ পূর্ব বুল্লা গ্রামে দাহ করা হয়েছে। তবে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে বলে তিনি জানান। হবিগঞ্জে ১৮৮০ বোতল বিদেশি মদ‘সহ  গ্রেফতার দুই  মাধবপুরে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল: কিশোরীর আত্মহত্যা দুই সাংবাদিকের বিরোধ থেকে সূত্রপাত, এরপর নবীগঞ্জ শহরে সংঘর্ষ-আগুন, ঝরল ৩ জনের প্রাণ মাধবপুরে ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক আটক হবিগঞ্জে ভুয়া চিকিৎসককে কারাদণ্ড ও জরিমানা

উলিপুরে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে ভিটামাটি হারিয়ে নিঃস্ব ১০,হুমকিতে শত পরিবার নয়ন

জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
  • আপলোডের সময় : রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৪৬ বার পঠিত

কুড়িগ্রামের উলিপুরের সরকারপাড়া ও মুসল্লিপাড়া গ্রামে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন।‘বাড়ি ছিল ওই যে কলাগাছ দেহা যায়, ওইহানে। ২৫টা বছর ধইরা বাড়ি ভাঙতাছি আর গড়তাছি। আর সহ্য হয় না। মনডা কয় গায়ে আগুন দিয়া সব শ্যাষ কইরা দেই।’ ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে সর্বস্বান্ত হয়ে নদের কিনারে দাঁড়িয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন নাগর আলী (৬৪)। আগ্রাসী হয়ে ওঠা এ নদের গ্রাসে আবারও ভাঙনের মুখে তাঁর ভিটামাটি। শুধু নাগর আলী নন, তাঁর গ্রামের শতাধিক পরিবার এখন ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে। প্রতিদিনই ভিটা হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে একের পর এক পরিবার। নাগর আলী কুড়িগ্রামের উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এ গ্রামে ভিটামাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অন্তত ১০টি পরিবার। প্রতিদিন একের পর এক পরিবারের ভিটামাটি গিলে খাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র। এ ছাড়া ভাঙন হুমকিতে রয়েছে বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার ও ঐতিহ্যবাহী মোল্লাহাট বাজার। ভাঙন রোধে সরকারের কাছে আকুতি জানিয়ে নাগর আলী বলেন, ‘দুর্গতি হইলো আমাদের এই নদী। আমরা তো ট্যাকাপয়সা চাই না। নদীটা ঠ্যাকায় দিলেই হয়।’ উপার্জনের টাকায় খেয়ে না খেয়ে সন্তানদের সুখের জন্য নতুন ঘর তুলেছিলেন দিনমজুর মোঘল হোসেন। ভাঙনে ভিটার একেবারে কাছে এসেছে ব্রহ্মপুত্র। নদের আগ্রাসী আচরণে তিনি বুঝতে পেরেছেন শেষ রক্ষা আর হবে না। শিশুসন্তান সুমনকে নিয়ে তাই পরম যত্নে গড়া ঘরের সবকিছু খুলে নিচ্ছেন। কোথায় যাচ্ছেন জিজ্ঞাসা করতেই কেঁদে ফেলেন মোঘল হোসেন। মোঘল বলেন, ‘নিজে না খাইয়া কষ্টের ট্যাকা দিয়া পোলাপাইনের জন্য ঘর করছিলাম। কপালে না থাকলে কী করুম। চারবার বাড়ি ভাঙছে। শ্যাষে শ্বশুরের দেওয়া ভিটায় ঘর করছিলাম। সেটাও হারাইলাম। অহন সব লইয়া রংপুরের পীরগঞ্জের দিকে যাইতাছি।’ মোঘলের ভাঙনকবলিত ভিটার কিছুটা দক্ষিণে ব্রহ্মপুত্রের কিনারে আরও কয়েক ঘর। মাঝখানে অন্তত ৫-৭টি পরিবার ঘর ভেঙে নিয়ে বিছানাপত্র রেখেছে খোলা আকাশের নিচে। ভাঙন থেকে বাঁচতে থাকার ঘর ভেঙে রান্নাঘরে বসবাস করছেন আনোয়ারা-মুসা মিয়া দম্পতি। ভাঙনে স্থানান্তরিত হতে হতে তাঁরাও ক্লান্ত। আনোয়ারা বলেন, ‘এত কুলায় না বাড়ি ভাঙা। মাইনসের জায়গায় আছিলাম। সব ভাইঙা-চুইরা গেল। পোলাপান লইয়া অহন কই যামু জানি না।’ এদিকে কয়েক কিলোমিটার ধরে চলমান ভাঙনে বিলীন হচ্ছে শত শত হেক্টর আবাদি জমি, বাড়ছে ভূমিহীন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা। খোদ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই ইউনিয়নের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন চলমান রয়েছে। একের পর এক পরিবার বাস্তুহারা হতে থাকলেও ভাঙন প্রতিরোধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি পাউবো কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার বিকেলে বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনকবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে আছে অর্ধশত পরিবার, আবাদি জমি ও গাছপালা। অনেকের বাড়ির গাছপালা নদের পানিতে পড়ে আছে। মোল্লারহাট বাজারের দক্ষিণ প্রান্তের একটি অংশে পাউবোর জিও ব্যাগ ধসে গেছে ব্রহ্মপুত্রের স্রোতে। ভাঙনের তীব্রতার কথা স্বীকার করে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আপাতত মোল্লারহাট বাজার প্রতিরক্ষায় ৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কাজও শুরু হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে বসতভিটা রক্ষায় কোনো কাজ শুরু হচ্ছে না।’

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..

লাখাইয়ে বিষ পানে গৃহবধূর মৃত্যু: মো নুরুজ্জামান রাজু হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার পূর্ব বুল্লা গ্রামে ২২ বছর বয়সী এক গৃহবধূ লিপি রাণী সরকার বিষ পানে মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বিষপানের পর দুই দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় নিজ বাড়িতে বিষপান করেন লিপি রাণী সরকার। বিষপানের পর তাকে দ্রুত বুল্লা বাজারের একটি ফার্মেসিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর এবং পানি খাওয়ানোর পর তিনি কিছুটা সুস্থ বোধ করলে ফার্মেসি থেকে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে বাড়িতে ফেরার কিছুক্ষণ পরই লিপি রাণী সরকারের অবস্থার অবনতি ঘটে এবং তার কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তাকে দ্রুত হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক রাত চিকিৎসার পর তার অবস্থার আরও অবনতি হলে পরদিন তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার তার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে লিপির লাশ পূর্ব বুল্লা গ্রামে তার স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসা হয় এবং সেখানেই তাকে দাহ করা হয়। লিপির বাবার বাড়ি মাধবপুরের দুর্গাপুর গ্রামে। তার বাবার নাম সতিন্দ্র সরকার। এ বিষয়ে লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বন্দে আলী নিশ্চিত করেছেন যে, মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে লিপির লাশ পূর্ব বুল্লা গ্রামে দাহ করা হয়েছে। তবে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে বলে তিনি জানান।

লাখাইয়ে বিষ পানে গৃহবধূর মৃত্যু: মো নুরুজ্জামান রাজু হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার পূর্ব বুল্লা গ্রামে ২২ বছর বয়সী এক গৃহবধূ লিপি রাণী সরকার বিষ পানে মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বিষপানের পর দুই দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় নিজ বাড়িতে বিষপান করেন লিপি রাণী সরকার। বিষপানের পর তাকে দ্রুত বুল্লা বাজারের একটি ফার্মেসিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর এবং পানি খাওয়ানোর পর তিনি কিছুটা সুস্থ বোধ করলে ফার্মেসি থেকে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে বাড়িতে ফেরার কিছুক্ষণ পরই লিপি রাণী সরকারের অবস্থার অবনতি ঘটে এবং তার কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তাকে দ্রুত হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক রাত চিকিৎসার পর তার অবস্থার আরও অবনতি হলে পরদিন তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার তার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে লিপির লাশ পূর্ব বুল্লা গ্রামে তার স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসা হয় এবং সেখানেই তাকে দাহ করা হয়। লিপির বাবার বাড়ি মাধবপুরের দুর্গাপুর গ্রামে। তার বাবার নাম সতিন্দ্র সরকার। এ বিষয়ে লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বন্দে আলী নিশ্চিত করেছেন যে, মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে লিপির লাশ পূর্ব বুল্লা গ্রামে দাহ করা হয়েছে। তবে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে বলে তিনি জানান।