হবিগঞ্জ জেলার লাখাইর উপজেলার স্বজনগ্রামে সার্বজনীন ৪টি মন্দিরের জায়গা জাল দলিলের মাধ্যমে আত্মসাতের চেষ্টা করে আসছেন আশীষ দাশগুপ্ত (৪২) নামে এক ব্যক্তি। সে ওই গ্রামের মৃত সুভাষ দাশের ছেলে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার সচেতন মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। তার এহেন অবৈধ কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন স্থানীয় ধর্মাবলম্বীরা। এ ঘটনায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাছাড়া এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতির কাছে গণ স্বাক্ষর করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্র জানায়, ২০২১ সালে আশীষ দাশগুপ্ত ও তার ভাই ভোলা দাশ যৌথভাবে উপজেলার স্বজনগ্রামের চালিতা গাছ তলা সার্বজনীন হরিনাম সংকীর্তন মন্দিরের দেবোত্তর ৪০ শতাংশ ভূমির মধ্যে ২০ শতাংশ ভূমি জাল দলিল তৈরি করে তাদের নামে খারিজ করে নেয়। যার নামজারি মোকদ্দমা নং ১৯১ (১/১)/২০২০-২১। উক্ত বিষয়টি এলাকায় প্রচার হলে হিন্দু ধর্মাবলম্বী জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করে। এক পর্যায়ে গ্রামবাসী তার বিরুদ্ধে একটি সভা ডেকে গণস্বাক্ষর প্রদান করে একটি রেজুলেশন করেন এবং লাখাই বাজার কালভৈরব মন্দির কমিটির সাধারন সম্পাদক, স্বজনগ্রাম শ্মশান কমিটির সাধারণ সম্পাদক, রুহিতনসী জয়কালী মন্দির কমিটির সদস্য পদসহ সকল ধর্মীয় পদ থেকে তাকে বহিস্কার করেন। তাছাড়া এমতাবস্থায় হরিনাম সংঘের ভূমি দাতা মৃত সত্যেন্দ্র পালের ওয়ারিশ রমেন্দ্র চন্দ্র পাল ও হেমেন্দ্র চন্দ্র পালকে বাদী করে তাদের পক্ষে মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবু মিন্টু লাল দাস লাখাই ভূমি অফিসে আশীষ দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে একখানা মিস কেইস করেন। যার ভকেট নং – ২২৮/৩১.৫.২০২৩ এবং স্মারক নং ৪২৬,/৩১.৫.২০২৩।
তাছাড়া রুহিতনসী জয়কালী মন্দিরের সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য ভুয়া ওয়ারিশ তৈরি করে আশীষ দাশগুপ্তসহ তার লোকজন মন্দিরের বিরুদ্ধে একটা মিথ্যা মামলা দায়ের করে। অবশেষে আদালতের রায়ে ওয়ারিশ মিথ্যা প্রমাণ হয়। যে কারণে তার অবৈধ অপচেষ্টা রুখে দেন গ্রামবাসী। শুধু তাই নয়, আশীষ দাশগুপ্ত তার প্রতিবেশি দীপক দেবকে সামাজিকভাবে হেনস্তা ও মানহানি করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত দীপক দেবের ছেলে সুমন দেবের বিরুদ্ধে একটি মেয়েকে দিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মিথ্যা মামলা করে এবং সেখানে তার ঠিকানা নাসিরনগর হিসেবে উল্লেখ করে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত তার ভুয়া ঠিকানা খুঁজে পায় এবং সেই মামলায় সুজন দেব বেকসুর খালাস পায় বলে অভিযোগে বলা হয়।
পরিশেষে বিরুদ্ধে ভূমি দখলের চেষ্টা, জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ আশীষ দাশগুপ্তকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ লাখাই শাখার সদস্য পদ থেকে বহিঃস্কার করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন এলাকাবাসী।