শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ছাত্রলীগের নেতা আরিফ হোসেন হাওলাদারের অপকর্মের খবর পড়ে আমরা উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ। আরিফ হোসেন বেশ কৌশলে এই অপকর্ম করেছেন। তিনি ছয়জন নারীকে ফাঁদে ফেলে তাঁদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন এবং গোপনে তার দৃশ্য ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
তবে ঘটনা প্রকাশের পর উপজেলা ছাত্রলীগ তাৎক্ষণিকভাবে আরিফকে বহিষ্কার করেছে। কিন্তু এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে, আইসিটি আইনে হয়নি। আর এখন পর্যন্ত আরিফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমরা চাই, পুলিশ দ্রুত তাঁকে গ্রেপ্তার করুক।
নারীদের ফাঁদে ফেলে সুযোগ নেওয়ার প্রবণতা বা এ ধরনের বিকৃতি দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। ইন্টারনেট, সামাজিক মাধ্যম ও স্মার্টফোনের কল্যাণে এসব যেন অনেক পুরুষের কাছে ডালভাত হয়ে গেছে। ইদানীং এর মাত্রা বেড়ে গেছে, একটি ঘটনা যেন আরেকটি ঘটনাকে উসকে দিচ্ছে।
কথা হচ্ছে সভ্যতার কিছু রীতিনীতি ও মানদণ্ড আছে, সমাজের মানুষকে তা মেনে চলতে হয়। তা না হলে সমাজে নৈরাজ্য দেখা দেয়। এই শিক্ষা লাভের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হচ্ছে পরিবার, তারপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেখানে মানুষ একধরনের বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। এই বন্ধন আলগা হয়ে গেলে অপকর্ম করতে মানুষের বাধে না। এ ছাড়া সমাজে সুস্থ বিনোদনের অভাব আছে। একসময় পাড়া-মহল্লায় খেলার ও নাটকের ক্লাব ছিল, স্কুলে গ্রন্থাগার ছিল। এখন ওসবের বালাই নেই, যার অভাবে মানুষের সুস্থ-স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সামাজিক মাধ্যম ও ইন্টারনেটের গঠনমূলক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সমাজে নীতি, নৈতিকতা ও সামাজিকতার শিক্ষা থাকতে হবে। সর্বোপরি আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে এসব করে কেউ পার না পায়। নারীরা এখন বাল্যবিবাহ রোধে এগিয়ে এসেছেন, ঘাসফুলের মতো সংগঠন হয়েছে, এবার এসব হয়রানি রোধেও নারীরা এগিয়ে আসতে পারেন। সমাজের সব সচেতন মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে।