পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েই নিজের দায়িত্ব শেষ করে ফেলেছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। বাংলাদেশ দলের কোচের দায়িত্ব আর পালন করবেন না তিনি। অথচ বিসিবি এখনও চেয়ে আছে তার ফেরার আসায়। আগেরদিনই বিসিবি পরিচালক এবং ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান বলেছেন, ‘হাথুরু আসলে তাকে থেকে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়া হবে। অন্ততঃ সামনে শ্রীলঙ্কা সিরিজটা যেন তিনি সম্পন্ন করে যান, সে অনুরোধ জানানো হবে।’ একই সঙ্গে আকরাম খান এও জানিয়েছেন, আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে ঢাকায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে হাথুরুর।
কিন্তু বিসিবি এখনও অলীক স্বপ্ন দেখে যাচ্ছে। হাথুরু যে বাংলাদেশ দলের কোচিংয়ে আর ফিরছেন না এটা এখন পুরোপুরিই নিশ্চিত। শুধু তাই নয়, তিনি ঢাকায় ফিরবেন, তবে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে নয়, কিংবা এ সম্পর্কিত কোনো আলোচনার জন্যও নয়। তিনি ঢাকায় ফিরে আসবেন, বাংলাদেশেরই বিরুদ্ধে, শ্রীলঙ্কার কোচ হয়ে।
ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো সংবাদ প্রকাশ করেছে, ‘শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে হাথুরুসিংহের মৌখিক আলোচনা ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করবে দুই পক্ষ এবং আগামী মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের হোম সিরিজে লঙ্কানদের কোচ হয়েই ঢাকায় আসবেন হাথুরুসিংহে।’
নভেম্বর ৯ তারিখই ক্রিকইনফোর মাধ্যমে সবাই জানতে পারে, বিসিবির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ওইদিনই সন্ধ্যায় বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাহমুল হাসান পাপন মিডিয়ার কাছে স্বীকার করেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের সময়ই বিসিবির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান হাথুরু। তবে তারা তার (হাথুরু) সঙ্গে কথা না বলে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে যাবেন না বলেও জানান পাপন। যদিও পাপন, এমনকি বিসিবির কয়েকজন কর্মকর্তা মিডিয়াকে জানিয়েছিলেন, হাথুরু আর তাদের কারো সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না। কারও কল ধরছেন না। বিসিবির সিইও যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাননি।
হাথুরুসিংহে শ্রীলঙ্কার কোচের দায়িত্ব নিচ্ছেন নাকি অন্য কোথাও যাচ্ছেন, এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানে না বিসিবি। বোর্ড পরিচালক এবং মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস ক্রিকইনফোকে জানান, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা এখনও জানি না সে আমাদের এখানে থাকছে কী থাকছে না। কিংবা অন্য কোথাও চাকরি নিচ্ছে কি-না সেটাও জানি না।’
যখন জিজ্ঞাসা করা হলো যে, শ্রীলঙ্কার কোচ হয়ে তো সম্ভবত তার প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ। বিষয়টা কেমন হবে? জবাবে জালাল ইউনুস বলেন, ‘যদি সে শ্রীলঙ্কার কোচের পদ গ্রহণ করে এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজেই এখানে আসে, তাহলে এটা লঙ্কানদের জন্য বিশাল সুবিধার। কারণ, আমাদের খেলোয়াড়দের সম্পর্কে এ মুহূর্তে হাথুরুসিংহে ছাড়া আর কেউ বেশি জানে না। শুধুমাত্র ল্যাপটপে বসেই নয়, একেবারে হাতে-কলমে সব কিছু জানে সে। তিনি আমাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা সম্পর্কেও অবহিত। আমাদের উইকেট এবং পরিবেশ সম্পর্কেও তার স্বচ্ছ ধারনা, জানা-শোনা। তবে এটা ঠিক, লঙ্কান ক্রিকেটারদের সঙ্গে সে দীর্ঘদিন পর কাজ করতে যাবে। সুতরাং, এখানে তার মানিয়ে নিতে কিছু সময় লাগতেই পারে।’
২০১৪ সালে ঠিক একই অবস্থায় পড়েছিল শ্রীলঙ্কাও। কারণ, লঙ্কানদের প্রধান কোচের পদ থেকে হঠাৎ পদত্যাগ করে ইংল্যান্ডের সহকারী কোচের দায়িত্ব নেন পল ফারব্রেস। তার এক সপ্তাহ পরই ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা।