সরেজমিনে দেখা যায়, স্টেশন ভবনটিতে নেই কোন আসবাবপত্র। পুরনো কিছু কাগজপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। দরজা ও জানালা ভেঙে পড়েছে। রাখা হয় গরু ও জ্বালানির জন্য গাছের পাতা এবং লাকড়ি। ভবনের স্থানে স্থানে ফাটল। ছাদ ও দেয়াল থেকে প্লাস্টার খসে পড়ছে। এ অবস্থায় যেকোন সময় ভেঙে পড়তে পারে ভবনটি। স্টেশনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ঝোপঝাড়। একই অবস্থা এর পাশে থাকা বাকী দুটি ভবনেরও। যাত্রী বসার পাকা দুটি আসন কোনভাবে টিকে আছে। স্টেশন থেকে যাতায়াতের রাস্তাটির বেহাল অবস্থা। পরিত্যক্ত কোয়াটারে কয়েকটি ছিন্নমূল পরিবার বসবাস করছে। অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রেলপথের এ স্টেশনের এক সময় বিরাট সুনাম ছিল। ছিল যাত্রীদের পদচারণা। বিকেলে কাঁচামালের বাজার বসত। ছিল কিছু দোকানপাটও। বন্ধ থাকায় এ স্টেশনে কোন ট্রেনের স্টপেজ নেই। আর আসেন না যাত্রী।
বসবাসকারীরা জানান, তাদের জমিজমা না থাকায় এসব পরিত্যক্ত কোয়াটারে বসবাস করছেন। এরমধ্যে সরকারের আশ্রয়ণে কয়েকটি পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। বাকীরা আবেদন করেছেন। তারা এখন পর্যন্ত সরকারি ঘর পাননি। ঘর পেলে এখান থেকে চলে যাবেন। আলাপকালে স্থানী বাসিন্দা সিরাজ মিয়া, মাহফুজ মিয়া, মঞ্জু মিয়া- এরা জানান, এ স্টেশনের ঐতিহ্য ছিল। স্টেশনটির নাম অনুসারে একটি ইউনিয়ন ও গ্রাম রয়েছে। বন্ধ থাকায় কোন ধরণের ট্রেন থামে না। স্টেশনটি চালু করা হলে আবার ফিরবে প্রাণচাঞ্চল্য। আসবে লোকজন। বসবে দোকানপাট ও কাঁচামালের বাজার। যাত্রী রুবেল মিয়া, কাজল মিয়া, মাসুক মিয়া জানান, প্রাচীন এ স্টেশনটির ঐতিহ্য রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে স্টেশনটি বন্ধ আছে। এটি দ্রæত চালু করা হলে স্থানীয় যাত্রীদের ট্রেন যাতায়াতে বিরাট সুবিধা হবে।
শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বাদশা আলম বলেন, লস্করপুর স্টেশন বন্ধ আছে। মাঝে মধ্যে সেখানে পরিদর্শন করা হয়। স্টেশনে মাদকসহ কোন প্রকারের অপরাধ সংঘটিত হওয়ার অভিযোগ পেলে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কোন প্রকারের ছাড় দেওয়া হবে না। শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার মো. আবুল খায়ের চৌধুরী বলেন, লস্করপুর স্টেশনটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় কোন ট্রেনের স্টপেজ নেই। এটি চালু হবে কিনা, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন।