সাম্প্রতিক সময়ে মৌলভীবাজার জেলার প্রেমনগর চা বাগানে শ্রমিক কার্ড নিয়ে অবৈধ লেনদেনের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, নিবন্ধিত এক শ্রমিকের কাজ তিন লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। এতে সরাসরি জড়িত রয়েছেন বাগানের ডিজিএম রফিকুল ইসলাম, ম্যানেজার ও টিলা বাবু প্রানেস কর।
ঘটনার সূত্রপাত হয়, যখন কয়েকজন সর্দার খেয়াল করেন, প্রেমনগরের শ্রমিক সেলিনা কাজ না করলেও, তার নামে হাজিরা দেখানো হচ্ছে। হবিগঞ্জের খবরের তদন্তে বেরিয়ে আসে, প্রকৃতপক্ষে সেই কাজটি করছেন অন্য একজন শান্তা নামে পরিচিত। যিনি ভিকটিম সেলিনা নামে পরিচিত। সেলিনার সাথে সাবেক ম্যানেজার হুসেইন উদ্দিনের পূর্ব থেকে ব্যক্তিগত বিরোধ ছিল বলে জানা গেছে। আসলে সেলিনা তার কাজটি শান্তার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। এর আগে শান্তা অনেকের বদলী কাজ করে আসছিল।
তদন্তে আরো প্রকাশ পায়, এই অবৈধ লেনদেনে টিলা বাবু প্রানেস কর নেন এক লাখ টাকা, এবং ডিজিএম রফিকুল ইসলাম ও ম্যানেজার ভাগ করে নেন বাকি দুই লাখ টাকা। অথচ চা বাগান পরিচালনার নীতিমালায় স্পষ্টভাবে বলা আছে, নিবন্ধিত শ্রমিক কার্ড বিক্রয় বা হস্তান্তর সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ন্যাশনাল টি কোম্পানির আওতাধীন প্রায় ১২টি চা বাগানে এমন অবৈধ কার্ড বাণিজ্য চলছে নিয়মিত। প্রতিটি শ্রমিক কার্ড ৩ থেকে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি হলেও, পুরো টাকাটা বিক্রেতা পান না। মাঠ পর্যায়ের ম্যানেজার, ডিজিএম এবং ঢাকার হেড অফিসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পর্যন্ত কমিশন দিতে হয় – এমন অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে।
এ ঘটনায় প্রেমনগরসহ সংশ্লিষ্ট চা বাগানগুলোর শ্রমিক সমাজে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত ও যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে ডিজিএম রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি রফিকুল ইসলামই প্রেমনগর চা বাগানের ম্যানেজারের দায়িত্বে রয়েছেন।